আদম তমিজী হক
২৮ সেপ্টেম্বর , বুধবার , ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন । যদিও নিজের ৭৫তম জন্মদিনে দেশের মানুষের পাশে থাকতে পারেননি শেখ হাসিনা । রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে তিনি আছেন দেশের বাইরে । কিন্তু তাই বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন নিয়ে সাধারণের উচ্ছাস থেমে থাকেনি ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর পরলোকগমন করেন ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ । ১৫ সেপ্টেম্বর, শেখ হাসিনা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডনে পৌঁছান। ১৯ সেপ্টেম্বর ছিল রাণীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান । সেই অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগদান করেন শেখ হাসিনা । সেই অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোসহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ।
রাণীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দেন । জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণে সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বরাবরের মতো ভাষণ দিয়েছেন বাংলায় । বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মানস-কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে আবারও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন । বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ছিল গভীর তাৎপর্যপূর্ণ । করোনা পরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক বিপর্যয় , ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ , অস্ত্র প্রতিযোগিতা নিয়ে নিজের বক্তব্যে শেখ হাসিনা ছিলেন বরাবরের মতো সাহসী । নিজের ভাষণে শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের সামনে রেখেছেন বর্তমান আর অনাগত বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের সুত্র । রাশিয়া-ইউকেরিন যুদ্ধের কারণে জ্বালানী আর খাদ্যদ্রব্যের মুল্য বৃদ্ধির কারণে নিম্ন আর মধ্যম আয়ের দেশগুলো যে সংকটে পড়েছে , তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে বিশ্বনেতাদের কাছে আহবান জানান ।
মাদার অফ হিউমিনিটি শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তাররোধসহ সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের তাগিদ দেন । বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উদ্যোগী হতেও বিশ্বনেতাদের প্রতি আহবান জানাতে ভোলেননি শেখ হাসিনা । বরাবরের মতো শেখ হাসিনার ভাষণ প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে ।
বিদেশ অবস্থানকালে পালিত হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন । বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রধানমন্ত্রীকে মিস করেছে সন্দেহ নেই । কিন্তু তাই বলে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালনে উচ্ছাস-উদ্দীপনার কোন কমতি ছিল না । শেখ হাসিনা নিজে ঘটা করে নিজের জন্মদিন পালন করতে পছন্দ করেন না । কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন স্মরণ করেছে নিজেদের মতো করে যথাযোগ্য মর্যাদায় । ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠন থেকে সাধারণ পর্যায়ে কেক কেটে বিশেষ অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন । সংবাদ-পত্র , টেলিভিশনের পর্দায় সম্ভবত এবারেই সবচেয়ে বেশী প্রচারিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের সংবাদ । ব্যক্তিগত পর্যায়ের ভালবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ থেকে তৈরি হয়েছে Sheikh Haina -A True Legend এর মতো প্রামাণ্যচিত্র ।
সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিবস পালনে মানুষের যে উৎসাহ দেখা গেছে , তাতে একটা কথাই প্রমানিত হয় – এই দেশের মানুষ তাদের প্রধানমন্ত্রীকে ভালবাসে । সেই ভালবাসার উপচে পড়া রেশ দেখা গেছে বিশেষদিনে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে । আসলে মানুষ তাদের প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে মিস করছে । তারা অপেক্ষায় আছেন , কবে তাদের অভিভাবক দেশে ফিরবেন ।
আমি নিজেও অপেক্ষায় আছি সেই মাহেন্দ্রক্ষণের । ৩ অক্টোবর , যেদিন ঘরে ফিরবেন আমাদের মা । মা ছাড়া এই ঘর এই বাংলাদেশ যে বড্ড শুন্য লাগছে ।
রাজনীতিবিদ , সমাজকর্মী
Leave a Reply